রায়পুরা প্রতিনিধি:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-৫ রায়পুরা সংসদীয় আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। তিনি সবচেয়ে প্রবীন ও বায়োজৈষ্ঠ আওয়ামীলীগ নেতা।

এ আসনে তার প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্র ডামি হিসাবে নির্বাচনে ঈগল প্রতিক নিয়ে লড়ছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী।

১৯৯৬ সাল থেকে প্রায় ২৭ বছর ধরে আ’লীগের দখলে এ আসনটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের হেভিওয়েট ১১ মনোনয়ন প্রত্যাশীকে পরাজিত করে রাজু এবারও দলীয় নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করছেন। এ আসনে ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় লড়ছেন।

স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সমর্থকরা এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। এ বার নির্বাচনে আসনে নৌকা এবং ঈগল নবীন প্রবীনের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

জানা যায়, ১৯৭০ সালসহ ৯৬ ও ২০০১ সালে এ আসনে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে রাজিউদ্দিন রাজু এমপি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে তার নিকট হেরে যান আবদুল আলী মৃধা। ২০১৪ সালে ১০ম সংসদ নির্বাচনে নৌকার কাছে বিএনপির নেতা জামাল চৌধুরী বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হন। ২০১৮ সালে তিনি বিএনপির প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন বকুলকে পরাজিত করে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হন। ছয়বারের সাংসদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এবারো সপ্তমবারের মতো বিজয়ী হবেন কি?

নৌকার নেতাকর্মীরা বলেন, ’৯৬ ও ২০০১ সালে এ আসনে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে রাজিউদ্দিন রাজু এমপি নির্বাচিত হয়। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে তার নিকট হেরে যান আবদুল আলী মৃধা। ২০১৪ সালে ১০ম সংসদ নির্বাচনে নৌকার কাছে বিএনপির নেতা জামাল চৌধুরী বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হন। ২০১৮ সালে তিনি নৌকা নিয়ে বিজয়ী হন। ছয়বারের সাংসদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপি স্বতন্ত্রকে এবারো পরাজিত করে সপ্তমবারের মতো বিজয়ী হবেন তিনি।

অপরদিকে বর্ষিয়ান এই রাজনীতি বিধের বিপরীতে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী কৌশল ডামি স্বতন্ত প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরীর গনজোয়ারে ভোটে বিজয়ী হবেন বলে মনে করছেন কর্মী সমর্থকরা।

রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমানের হাত ধরে ৫৩ বছরের রাজনীতিতে তৃনমুলের নেতাকর্মীদের ভালোবাসা নিয়ে এখনো বেঁচে আছি। ১৯৯৬ সালে দেড় কিলোমিটার পাকা রাস্তা দিয়ে শুরু করেছিলাম। সাড়ে চার শত কিলোমিটার পাকা রাস্তা করেছি। মান্নান ভূইয়া বলেছিলো রাজু সাব চরাঞ্চলে আলোর লতি দিয়ে বিদ্যুৎ নিবে। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে মেঘনা নদী পার করে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি। শেখ হাসিনার হাত ধরে এখন পর্যন্ত রাস্তা ঘাটসহ অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন ব্যাপক পরিবর্তন করতে সক্ষম হই। এ নির্বাচন ওই আমার শেষ নির্বাচন। আগামীতে মেঘনা নদীতে ব্রিজ নির্মাণ, চরে থানা স্থাপনসহ অসমাপ্ত কাজগুলো করতে চাই।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানকে টাকা খরচ করে আমিই উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়ে ছিলাম। সে আমার হাত ধরে রাজনীতিতে এসে ছিলো এখন সে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে। ৫৩ বছরের রাজনীতিতে চাওয়া পাওয়ার কিছুই নেই যা করেছি মানুষের জন্যই করেছি। রায়পুরার মানুষের এবং তৃনমুল নেতাকর্মীদের অন্তরে হৃদয়ে ভালবাসাটাই চরম পাওয়া।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমার প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেছেন। আশাকরি আগামীতেও আপনারা আমার পাশে থাকবেন। আগামী নির্বাচনে সবাই সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে এসে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করুন। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, “রায়পুরাতে এবার পরিবর্তনের লক্ষ্যে ঈগলের গন জোয়ার বইছে। সুষ্ঠু ভোট হলে শতভাগ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।”

জেলা প্রশাসক ও রিটার্ণিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, নরসিংদী-৫ রায়পুরা আসন থেকে দলীয় স্বতন্ত্রসহ মোট নয় জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপিসহ নয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন।

উলেখ্য, ২৪ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বৃহত্তর উপজেলা। এ আসনটিতে মোট ভোট কেন্দ্র ১৬৩ টি ভোট কক্ষ ৯৮৩ টি পুরুষ ভোটার ২৩৪০৯৬, নারী ভোটার ২২১১৮৭, হিজরা ১৪ জন মোট ভোটার সংখ্যা ৪৫৫২৯৭ জন। ১০ জন নির্বাহী হাকিম, ২ প্লাটুন সেনাবাহিনীর, ৬ প্লাটুন বিজিবি, ২ প্লাটুন র‍্যাবসহ পুলিশ আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বায়িত্ব পালন করবেন।