নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে ক্ষমতার পালাবদলের পর এক আওয়ামী লীগ নেতার লিজ নেয়া (কথিত দাবিদার) কোটি টাকার সরকারি জলমহাল দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। তাকে সহযোগী করেছেন ৩ আনা অংশীদারি ইজারাদার দম্পতির রাম চরণ দাস ও তাঁর স্ত্রী অনিতা রাণী দাস ।
জলমহালটিতে ইজারা মূল্যসহ এক কোটিরও বেশি টাকা বিনিয়োগ করেও মোস্তাক আহমেদ কমল জলমহালটিতে যেতে পারছেন না। এমনকি ইজারাদার দম্পতি তার বিরুদ্ধে টাকা ও চুক্তিনামাসহ প্রমাণাদি জোর করে নেয়ার অভিযোগ এনে আদালতে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন বলে জানান।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে জেলা শহরের হোটেল শেরাটনের কনফারেন্স রুমে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন এবং প্রতারক দম্পতির বিচারসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানান মোস্তাক আহমেদ কমল।
এর আগে গত ১ অক্টোবর জলমহালটির ইজারাদার দম্পতি রামচরণ দাস ও অনিতা রানী দাস একই ভেন্যুতে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ কমলের বিরুদ্ধে জলমহালটি দখলে নেয়ার পাঁয়তারা অভিযোগ করেন।
রামচরণ দাস অষ্টগ্রাম উপজেলার ভাটিনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি এবং তার স্ত্রী অনিতা রানী দাস বর্তমান সভাপতি। তারা উপজেলার ভাটিনগর গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে মোস্তাক আহমেদ কমল অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও অষ্টগ্রামের বর্ধমানপাড়ার বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে ইজারাদার দম্পতি রামচরণ দাস ও অনিতা রানী দাস অভিযোগ করেছিলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গত ২৪ জুন জলমহালটি সমিতির নামে অনিতা রানী এক বছরের জন্য ইজারা পান। গত ৩০ জুলাই অষ্টগ্রাম পুরাতন কোর্ট বিল্ডিংয়ের কাছে মোস্তাক আহমেদ কমল তাদের দুইজনের পথরোধ করে সাথে থাকা সোনালী ব্যাংকের চেক বইয়ের আনুমানিক ৫-৬টি পাতায় জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। এছাড়া আলাদা ২টি স্ট্যাম্পে তাদের দুইজনের স্বাক্ষর নেয়। এ সময় মোস্তাক আহমেদ কমল তাদের জলমহালে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়।
এরপর গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইউএনও কার্যালয়ে মোস্তাক আহমেদ কমল ও বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের নেতৃত্বে ইজারাদার দম্পতির উপর হামলা চালানো হয়।
তাদের এসব অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে সোমবারের (৭ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাক আহমেদ কমল জানান, জলমহালটি ইজারা পাওয়ার জন্য বিডি জমা থেকে শুরু করে আনুসঙ্গিক যাবতীয় ব্যয় তিনি নির্বাহ করেন। সরকারি কোষাগারে মোট ৭৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৪১ টাকা জমাসহ জলমহালটিতে এক কোটি টাকারও বেশি টাকা খরচ করেন। পরে গত ২৯ জুলাই স্ট্যাম্পের মাধ্যমে তাকে জলমহালের ১৩ আনা অংশীদারিত্ব দেয়া হয়।
মোস্তাক আহমেদ কমলের অভিযোগ, বাজিতপুর উপজেলার হুমায়ুনপুরের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা হেলাল খানের সাথে আঁতাত করে তাকে জলমহাল থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। একইভাবে তাকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরসহ তাকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনে প্রতারক ইজারাদার দম্পতি সংবাদ সম্মেলন করে।
মোস্তাক আহমেদ কমল ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রতারক দম্পতির বিচারসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। এ সময় তিনি তার প্রাণনাশেরও আশংকা প্রকাশ করেন।
মোবাইল ফোন কল রিসিভ না করায় অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা হেলাল খানের বক্তব্য জানা যায়নি।
অনিতা রানীর মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাজিতপুর উপজেলার হুমায়ুনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আদেল উপস্থিত ছিলেন।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।