কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জে একের পর এক সেবার নামপ গড়ে উঠছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যেসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগেরই নেই সঠিক সেবার বা পরীক্ষার মান। বাহারি নামের এসব স্বাস্থ্যসেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন শহরের অলি-গলি দখল করলেও এবার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দেয়াল, গেট, সাইনবোর্ড এমনকি আশেপাশের গাছপালাও ঢাকা পড়েছে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পোস্টার আর বিজ্ঞাপনচিত্রে।
এসব পোস্টারে চিকিৎসা সেবার লোভনীয় অফার, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তালিকা এবং বিভিন্ন টেস্টের ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে চলছে রোগী জোটানোর প্রতিযোগিতা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরের দেয়ালে যত্রতত্রভাবে লাগানো এইসব ব্যানার-পোস্টার কিংবা ষ্টিকার শুধু দৃশ্যদূষণই করছে না, বরং সাধারণ রোগীদের রীতিমত বিভ্রান্ত করছে। অনেকেই সরকারি চিকিৎসা না নিয়েই এসব বিজ্ঞাপনের প্রভাবে বেসরকারি ক্লিনিকে চলে যাচ্ছেন। এতে রোগীরা হয়রানির পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি ভুল চিকিৎসায় অনেক রোগীকে প্রাণও দিতে হচ্ছে ভূল চিকিৎসা কিংবা অবহেলা জনিত কারণে।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো হাসপাতালকে চুষে খাচ্ছে। হাসপাতালকে ঘিরে তারা ব্যবসা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হাসপাতাল থেকে রোগী বের করে নেওয়ার জন্য মাসিক বেতনে দালাল নিয়োগ দিয়েছে। তারাই হাসপাতলে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অপপ্রচার করে বেড়াচ্ছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ইনডোর, আউটডোর সর্বত্র তাদের প্রতিষ্ঠানের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনের ছড়াছড়ি। অথচ ১৯৮২ সালের মেডিকেল প্র্যাকটিস, প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরীজ অধ্যাদেশে বেসরকারি হাসপাতাল গঠন এবং পরিচালনার দিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি হাসপাতালের ৩০০ গজের মধ্যে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিক থাকতে পারবে না।
ডা. রাকিবুল ইসলাম ফারুকী বলেন, এ ধরনের অব্যবস্থাপনা বন্ধ করতে হাসপাতাল প্রশাসনের সক্রিয় উদ্যোগ প্রয়োজন। সরকারি হাসপাতালের দেয়ালকে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের প্রচারমাধ্যমে পরিণত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ বিষয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারকে একাধিক কল ও ক্ষুদে বার্তা দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।