নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের বন্দর নগরী ভৈরব শহরের কালিপুর হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটির দাতা ও সাধারন অভিভাবক ভোটার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গেল ২৬ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগে যুগ্মসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক ১) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এই বিষয়ে একটি অভিযোগ করেন কালিপুর হাইস্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি মো. আতাউর রহমান, ছাত্তার মিয়া, সেলিম মিয়া ও রোকসানা আক্তার। তারা ৪ জনই ২৪ জুন অনুষ্ঠিত কালিপুর হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিযোগ তদন্তকারী সদস্য আকলিমা বেগম।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ২৪ জুন কালিপুর হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছে। ঘোষিত তফসিলের আওতায় প্রস্তুতকৃত ভোটার তালিকায় দাতা ভোটার ও সাধারন অভিভাবক ভোটার তালিকা প্রনয়নে চরম অনিয়ম ও অসংগতি করা হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের নিয়মানুযায়ী প্রবিধানমালার ১৭ ধারায় নির্দেশনা রয়েছে ম্যানেজিং কমিটি মেয়াদ উর্ত্তীণের নূন্যতম ৯০ দিন পূর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল পদের ভোটার তালিকা তৈরী করতে হবে। কিন্তু তা না করে আরো ১৭ দিন বিলম্ব করে ৭৩ দিন পূর্বে মনগড়া চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে আইন লংঘিত হয়েছে। তালিকায় উদ্দেশ্যে প্রনোদিত ও নির্বাচনের ফলাফল প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে অতিরিক্ত দাতা ভোটার ও সাধারন অভিভাবক ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থে ম্যানেজিং কমিটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। তাই অসংগতি ও অনিয়মের মাধ্যামে প্রস্তুতকৃত দাতা ও সাধারন অভিভাবক ভোটার তালিকার আওতায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের স্কুলের সাধারন অভিভাবকের মধ্যে নেতিবাচক ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সম্পূর্ন ভোটার তালিকার সুষ্পষ্ট তদন্ত করে ও স্কুলের স্বার্থে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নতুন তফসিল ঘোষনা করে পুনরায় নির্বাচন ব্যবস্থা করার আহবান জানানো হয়।
জানা যায়, কালিপুর হাই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েছেন হারুণ উর রশিদ, দাতা সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. ফজলুল হক, সাধারণ অভিভাবক সদস্য রফিকুল ইসলাম, সেলিম আহমেদ, নবী হোসেন ও স্বপন মিয়া। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মাধবী লতা পুতুল, শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুর রউফ ও মো. জসিম উদ্দিন। সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার নির্বাচিত হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আতাউর রহমান বলেন, আমি অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন করেছি। ভোটের দিন আমরা অনেকে বুঝতে পারি কমিটি আমাদের সাথে বেঈমানী করেছে। ভোটের দিন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি মনগড়া নির্বাচন করেছে। ৯০ দিন আগের ভোটার তালিকা তৈরী করার কথা থাকলেও তা ১৭ দিন সময় বেশি নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করেছে। আমরা এবিষয়ে ইউএনও বরাবর ২৬ জুন অভিযোগ দেয়ার পর ২ জুলাই আমাদেরকে ইউএনও অফিসে ডেকে নিয়েছে ঠিকই তবে তদন্ত কমিটি। অনেকক্ষন কথা বার্তা বলেও আমাদের কোন সমাধান দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে আরেক অভিযোগকারী অভিভাবক প্রতিনিধি রোকসানা আক্তার জানান, ভোটার তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। নির্বাচন শেষে নির্বাচন কমিটির নেতৃত্বে থাকা উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার স্বপ্না বেগম পক্ষপাতিত্ব করেছেন। আমাদের ভোট গননার সময় ভিতরে নিয়েও কিছু দেখায় নি। নির্বাচন শেষে ১৫ মিনিট পরে আমাদের গণনার রুমে নিয়ে যায়। তারা নিজেদের মতো করে ফলাফল প্রকাশ করেছে। আমাদের কোন সিগনেচার ও নেননি। আমরা চাই প্রয়োজনে আবার সবার সামনে ভোট গণনা হোক। তবে নতুন করে ভোট দানের সুযোগ হলে ভাল হয়। আমার ৯০% জনমত থাকার পরও আমাকে ফেল করানো হয়েছে।
এ বিষয়ে একাডেমিক সুপার ভাইজার স্বপ্না বেগম বলেন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের নিয়েই নির্বাচন পরিচালনা করা হয়েছে। তারা পরাজিত হয়েছে বলে এখন মিথ্যাচার করছে। নির্বাচনের আগে অভিযোগ করলে তা বিবেচনার সুযোগ ছিল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আমাকেসহ ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে ইউএনও স্যার। তদন্ত শেষে ইউএনও স্যার বরাবর ৪ জুলাই প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিনের সাথে কথা বলতে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেনি। এমনকি মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা দিলে তিনি সাড়া দেননি।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।