বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র নার্স সাগর রায় রাজিব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করা ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)’ একটি নতুন রাজনৈতিক দল, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ঐতিহাসিক জুলাই আন্দোলনের বেশকিছু সাহসী ও তরুণ ছাত্রনেতা। দলটির প্রতীক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে শাপলা ফুল, যা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল।
এই প্রেক্ষিতেই সাগর রায় রাজিব তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে শাপলাকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, “শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল এবং জাতীয় নির্দশন,, এটা তোমাদের মতো জারজদের বাপের সম্পত্তি না যে চাইলাম আর নিয়া গেলাম,, তোমরা বরং কদম ফুল বা কনডম মার্কা বা প্রতিক হিসাবে চাইতে পারো”-এই বক্তব্যের সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন একাধিক ‘মধ্যমা আঙুল’ ইমোজি, যা স্পষ্টভাবে অশালীন ও উত্তেজক বার্তা বহন করে।
এমন মন্তব্যকে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও সামাজিক সচেতন মহলসহ নেটিজেনরা। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এধরনের ভাষা ব্যবহার কতটা শোভনীয় তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
রাজিবের দীর্ঘদিনের এক সহকর্মী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “নাগরিক পার্টির যারা জুলাই আন্দোলনের জন্য এত ত্যাগ করেছে, তারা দল গঠন করবেই এটা তাদের অধিকার। সবারই মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। সে (রাজিব) আগেও আওয়ামী লীগের সাপোর্ট করতো, এখন নতুন কোনো দল তার ভালো লাগবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে এমন অশ্লীলভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো কি একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে মানায়?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক হাফেজ ইকরাম হোসেন জানান, একজন সরকারি কর্মচারী ফেসবুকে এমন মন্তব্য করতে পারেন না। শুনেছি সে আগে আওয়ামীলীগ বা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। প্রশাসনের ভিতরে এখনো ফ্যাসিস্টের দোসররা রয়েছে তারই প্রমাণ এই নার্স। বিষয়টি আমরা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তারা যদি প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা কর্মীরা এর জবাব দিবে।
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সাগর রায় রাজিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হেলিস রঞ্জন জানান, “কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এ ধরনের আচরণ একজন সরকারি কর্মচারীর কাছ থেকে কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
হাসপাতালের একটি সুত্র সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে বলেছেন, জুলাই আগষ্টের আন্দোলন চলাকালীন এই রাজীব প্রতিদিন এই ছাত্রদের গালিগালাজ করত।
নেটিজেনদের দাবি, এ ধরনের কর্মকান্ডের জন্য দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে কোনো সরকারি কর্মকর্তা সামাজিক মাধ্যমকে অপব্যবহার করে কুরুচিপূর্ণ বার্তা দিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের সম্মান ক্ষুণ্ণ না করতে পারে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।