কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরু বলেন, আওয়ামীলীগ যখনই ক্ষমতায় গিয়েছে জনগণের উপর গণহত্যা চালিয়েছে। ৭১ থেকে ৭৫ সালে, শাপলা চত্বরে, বিডিআর বিদ্রোহে এবং সর্বশেষ ২৪শের জুলাই আগষ্টে।
এ সময় তিনি, দুর্বৃত্তদেরকে ধরার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমরা এই অভিযানকে স্বাগত জানাই। দেশে অবস্থানরত আওয়ামী দুর্বৃত্তদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য সামরিক বাহিনী পুলিশ, র্যাব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাত্র-জনতা নাগরিক যৌথভাবে কাজ করবে। তবে নিরীহ একটা মানুষের সঙ্গেও অন্যায় করবেন না। কারো বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া, কারো বিল্ডিং ভেঙে দেওয়াকে আমরা সমর্থন করিনা। কারণ, পৃথিবীর ইতিহাসে বিপ্লবের পরে প্রতি বিপ্লব হয়। ক্যু-র পরে পাল্টা ক্যু হয়। বাংলাদেশেও ৭৫ পরবর্তী খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ক্যু-র পাল্টা ক্যু দেখেছি। বাংলাদেশের বর্তমান যে সময় এই সময়টা খুব বেশি ভালো ভাবার সময় না। এই সময় অস্থিরতা তৈরি করার জন্য দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশি-বিদেশি নানা চক্র কাজ করছে। সেই ক্ষেত্রে গণঅভ্যুত্থানের শক্তি সমূহকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামীর বাংলাদেশকে বিনির্মাণের জন্য এখানে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে।’
আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার পৌর সদর ঈদগাহ ময়দানে পাকুন্দিয়া উপজেলা গণ-অধিকার পরিষদ আয়োজিত গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন ‘এদেশে যারাই ক্ষমতায় আসে কেউ ভারতের গোলামি করে, কেউ পাকিস্তানের। কেউ মার্কিনপন্থি, কেউ চীনপন্থি। কিন্তু আমরা বারবার বলেছি কোনো পন্থি হয়ে বাংলাদেশকে ঝুঁকিতে ফেলা যাবেনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলা যাবেনা। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বাংলাদেশ পন্থি রাজনৈতিক দল হতে হবে।’
ভিপি নুর তার বক্তব্যে আরো বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী-সমর্থক নিরীহ নেতা-কর্মী তারা প্রয়োজনে নতুন নামে নতুনভাবে রাজনীতি করবে। কিন্তু ডাকাত, খুনি, সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের নামে এই দেশে রাজনীতি করার কোনো জায়গা নেই। আওয়ামী লীগের মতো একটি ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল, গণহত্যাকারী খুনির দল এদেরকে যদি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা না হয় আগামীর বাংলাদেশে এমনই ফ্যাসিস্ট তৈরি হবে, খুনি স্বৈরাচার তৈরি হবে। কাজেই আমরা বারবার ছাত্র জনতার রক্তে, শহিদদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হতে দেখতে চাইনা। আমরা চাই এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার চিরতরে বিলুপ্ত হউক। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ হোক।
তিনি বলেন, ‘আমি এখানে আসার পর কেউ একজন আমাকে একটি স্লীপ ধরিয়ে দিয়েছে। নতুন সিন্ডিকেট করে পাকুন্দিয়া থেকে কিশোরগঞ্জের ভাড়া নাকি ৩০ থেকে ৫০ টাকা করেছে। ইউএনও সাহেব নাকি অনুমতিবিহীন এই গনহত্যার ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী মামলার আসামি তাদের বালু উত্তোলনের ব্যবসার টেন্ডার দিয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের উৎপাতে মানুষ আবার অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষণ কিন্তু কারো জন্য ভালো না। বেশি দূর যাওয়া লাগবে না। খুব নিকট অতীতেই আওয়ামী লীগের নিষ্ঠুর পতন আপনারা দেখেছেন।’
উপজেলা গণ-অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান, সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক, উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন ও কিশোরগঞ্জ জেলা গণ-অধিকার পরিষদের আহবায়ক নাসির উদ্দিন লিটন প্রমুখ।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।