বিশেষ প্রতিনিধিঃ

সড়কে প্রকাশ্যে দুলাল মিয়া নামে একজনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে, ১৬ বছর আগে খুন হওয়া রনি!
একই সময় ফরিদ মিয়াকে ‘পিঠিয়ে থেতলানো জখম করেছে,৭ বছর ধরে মালোশিয়ায় কর্মরত প্রবাসী কায়েছ মিয়া! আহতরা কিশোরগঞ্জে চিকিৎসা নিলেও, মৃত রনি মিয়া ও মালোশিয়া থাকা কায়েছ মিয়া এখন কিশোরগঞ্জ সদর থানার মামলার আসামী। এ নিয়ে জনমনে কৌতুহল এও কি সম্ভব!

এমনই এক ঘটনার অবিশ্বাস্য অভিযোগ উঠেছে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় দায়ের করা একটি মামলায়। যাহার মামলা নং ৪১, তাং ২০/০৪/২৫ ইং।

সুত্র জানা যায়, গত ১৭ এপ্রিল অষ্টগ্রাম উপজেলার খয়েরপুর-আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাপুর গ্রামের কয়েক জন, কিশোরগঞ্জ আদালতে একটি মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফিরার পথে কিশোরগঞ্জ শহরের ডায়বেটিস হাসপাতালের সামনের সড়কে হামলার শিকার হন এক পক্ষ।

পরে, এই ঘটনায় ২০ এপ্রিল রোববার কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় ৩১ জনকে আসামী করে মামলা করেন আব্দুল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা আয়ুব আলী।

অভিযোগ উঠেছে, ৩২৩/২২৬ সহ বিভিন্ন অপরাধে দায়ের করা মামলায় আক্তার মিয়া, বাচ্চু মিয়া, কায়েছ মিয়াসহ অনেক কে হয়রাণি করতে করা হয়েছে আসামী।

মামলার এজহারভুক্ত ৩১ নম্বর আসামী রনি মিয়া (২৭) পিতা মোতালিব ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০০৯ সালে ঢাকায় খুন হন। ২০ নম্বর আসামী কায়েছ মিয়া ৭ বছর ধরে তিনি মালোশিয়া প্রবাসী হিসেবে কর্মরত আছেন।

এজহার সুত্রে জানা গেছে, মামলার ২ নম্বর স্বাক্ষী দুলাল মিয়া’কে নানাভাবে আহত করার সময় মামলার ৩১ নম্বর আসামি (২০০৯ সালে খুন হওয়া) রনি ‘তাহার হাতে থাকা ছুরি দিয়া উক্ত জখমীর ডানকাধে কুব মারিয়া মারাত্মক কাটা রক্তাক্ত জখম করে’।

মামলার ২০ নং আসামি ৭ বছর ধরে মালোশিয়া প্রবাসী কায়েছ মিয়া ‘তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া সাক্ষী কবির মিয়ার সমস্ত শরীরে বাইরাইয়া ফোলা নীলা ও থেতলানো জখম করে’। পরে, আসামী হাকিম ও কায়েছ মিয়া মিলে ‘তাহাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়া স্বাক্ষী ফরিদ মিয়ার সমস্ত শরীরে বাইরাইয়া ফোলা নীলা ও থেতলানো জখম করে’।

এই বিষয়ে মালোশিয়া প্রবাসী কায়েছ মিয়া বলেন, ৭ বছর ধরে বিদেশ থাকি, তিন বছর আগে বড় ছেলেকেও মালোশিয়া নিয়ে আসছি। আমি কিভাবে দেশে গিয়ে মাঠপিঠ করলাম? আমি এই মিথ্যা মামলার বাদী ও স্বাক্ষীর শাস্তি চাই।

নিহত রনি মিয়ার মা রহিমা বলেন, আমার নিভানো আগুন জ্বালিয়ে দিল ওরা। ২০০৯ সালে ঢাকা বিমানবন্দর এলাকায় খুন হয় আমার ছেলেটা। এখনও সেই মামলা চলছে। খুন হওয়া ছেলেরে আসামি করছে, তাদের উদ্দেশ্য কী? আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

আসামী আক্তার মিয়া (৫৫) বলেন, ঘটনার দিন আমি আব্দুল্লাপুর হাওরে হাঁসের খামারে ছিলাম। অলৌকিক ভাবে কিশোরগঞ্জ গেলাম কেম্নে? মিথ্যা আসামী করা হয়েছে আমারে।

মামলার বাদী আয়ূব আলী বলেন, ৭ বছর আগে যদি বিদেশ থাকে, ওনারা কিভাবে জড়িত থাকবো কিশোরগঞ্জ। থাকবো না। এইডা ভুলের মাধ্যমে নাম দিতে পারে। যেরা যেরা (স্বাক্ষী) মাইর খাইছে হেরা প্রত্যেকে নাম কইছে, হেই (সেই) নামগুলো আসামি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ তুতুল উদ্দিন বলেন, ওসি স্যার ছুটিতে আছেন। এই বিষয়টি এখনই আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।