সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে ৪ টিতেই বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। ব্যতিক্রম কেবল সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে। নৌকার জয়জয়কারের এই ভোটের বিরুদ্ধে স্রোতে দাঁড়িয়ে সুনামগঞ্জ-২ আসনে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি ড.জয়া সেনগুপ্তা। প্রায় ৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে কাঁচি প্রতীকে জয় লাভ করেছেন।
ড. জয়া সেন এই আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি প্রয়াত জাতীয় নেতা ও সাবেক মন্তী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী। এবারও আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি।
বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ ড. জয়া সেনের বদলে এ আসনে এবার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে আল আমিন চৌধুরী।
তিনি পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল- মামুনের আপন ছোট ভাই।
দলীয় মনোনয়বঞ্চিত হয়ে ড. জয়া এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। জয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বিএনপি নির্বাচনে না আসা সত্ত্বেও এ আসনে জমজমাট ও হাড্ডাহাড্ডি ভোটের লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দেয়।
সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ড. জয়ার স্বামী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত । ফলে এ ভোটের মাঠে আসনটি সুরঞ্জিতের আসন হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের দলীয় ভোটের বাইরেও এখানে রয়েছে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বিশাল ব্যক্তি ইমেজ। সুরঞ্জিতের মৃত্যুর পর জয়া সেনও এখান থেকে টানা দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
অপরদিকে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রতীক নিয়ে প্রতিন্দ্বন্দ্বি আল আমিন চৌধুরী শাল্লা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ছিলেন।
চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হন তিনি। এছাড়া আল আমিনের বাবা শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তার পরিবারেরও ভালো গহণযোগ্যতা রয়েছে এলাকায়। ফলে শুরু থেকেই এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশা করা হচ্ছিলো।
গেল রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচন শেষে স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নৌকা প্রতীকে আল আমিন চৌধুরী ৪২ হাজার ৭৫ ভোট এবং কাঁচি প্রতীকে ড. জয়া সেনগুপ্তা ৫০ হাজার ২৯৫ ভোট পেয়েছেন। ফলে প্রায় ৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয় লাভ করেছেন জয়া সেন।
স্থানীয় কয়েকজন ভোটারের সাথে আলাপ করে জানা যায়, জয়া সেনের বিজয়ের নেপথ্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তি ইমেজ বড় ইস্যু ছিলো। পাশাপাশি এলাকাব্যক্তিক ইজমও কাজ করেছেন। জয়া বাড়ি দিরাই উপজেলায়। আর আল আমিন চৌধুরীর বাড়ি শাল্লা উপজেলায়। স্বাধীনতার পর থেকেই এখানে দিরাইর লোক এমপি হয়েছেন। ভোটও বেশি দিরাই উপজেলার।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।