কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাঈদ আহমেদের তিনটি ড্রেজার জব্দসহ দুইদিনে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ।
গতকাল রোববার (২৫ আগষ্ট) বিকেলে উপজেলার পূর্ব অষ্টগ্রাম ইকুরদিয়া সংলগ্ন মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
তার আগের দিন শনিবার (২৪ আগষ্ট) উপজেলার বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের বাঘাইয়া ও নোয়াগাঁও গ্রামের মধ্যবর্ত্তী মেঘনা নদী থেকে একটি ড্রেজার জব্দ ও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাঈদ আহমেদ মেঘনা নদীতে তিনটি ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিলেন। গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, সভাপতি সাঈদের ‘প্রধান সেনাপতি’ খ্যাত উপজেলা বিএনপির ক্ষুদ্র ঋণ ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক, পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আকসার মিয়ার নেতৃত্বে এসব বালু উত্তোলন করা হয়।
এতে, নদীর তীরবর্ত্তী গ্রাম ও ফসলী জমিতে ভাঙ্গন দেখা দেয়। বিপন্ন হচ্ছে মৎস্য সম্পদ, হুমকির মুখে হাওরাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য। প্রভাবশালী এই বালু দুর্বৃত্ত চক্রের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা মুখ খোলতে ভয় পায়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনি ও রোববার অষ্টগ্রাম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে বালু উত্তোলনের ড্রেজার ‘এমভি সজীব রুহান’সহ তিনটি ড্রেজার এবং ১১জনকে গ্রেপ্তার করে আরো ৮-৯ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসময়, বালু বোঝাই একটি ভাল্কহেডসহ কয়েক জন পালিয়ে যায়।
পরে, পৃথক দুটি মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১০-১২ জন অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল ইউনিয়নের মুসলিমপাড়ার বাসিন্দা দরবেশ মিয়ার ছেলে মোঃ কামরুল ইসলাম (৪০), সোনারুহাটির বাচ্চু মিয়া ছেলে সারুফ মিয়া (৩৮), দেওঘর ইউনিয়নের কাগজীগ্রামের হাছেন আলীর ছেলে বুলবুল আহমেদ (৩৪), ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরাইল উপজেলার ধানতলিয়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে নিহা আলম (২৪) ও নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের সৈয়দ মিয়ার ছেলে সাহেব জামাল (৪০)।
রোববার গ্রেপ্তার হওয়া ৬ জন হলেন, পূর্ব অষ্টগ্রামের শেখরহাটির মেনু মিয়ার ছেলে নয়ন মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগর উপজেলার কদমতলী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে তাবারক হোসেন, ইদ্রিস মিয়ার ছেলে জীবন মিয়া, বরকত হোসেনের ছেলে কাসেমমিয়া, গোপালনগর গ্রামের শাহাদুজ্জামানের ছেলে রিয়াদ মিয়া ও লক্ষ্মীপুর জেলার রামগাতি উপজেলার সুলাইমান মিয়ার ছেলে শামীম মিয়া।
এই বিষয় অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাঈদ আহমেদ বলেন, আমি কখনও এসব ব্যবসার সাথে জড়িত নই। সবই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা। আমি এসব ষড়যন্ত্রের নিন্দা জানাই।
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম জানান, গত শনিবার ও বরিবার ৩ টি ড্রেজার জব্দসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।