মোহাম্মদ খলিলুর রহমানঃ
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রেমিকের প্রতিবন্ধী বাবাকে পিটিয়ে হত্যার মূল আসামী রুবেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বাজিতপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষের নেতৃত্বে বাজিতপুর থানার একটি চৌকস দল প্রযুক্তির সহায়তায় রুবেলকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, ১৬ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে বাজিতপুর থানাধীন মাইজচর ইউনিয়নের আয়নারগোপ গ্রামের মধুচন্দ্র দাসের বাড়িতে প্রতিবেশী রুবেল গংদের সাথে পূর্ব বিরোধের জের ধরে মারামারির ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার হয়ে প্রতিবন্ধী মধুচন্দ্র দাস মৃত্যুবরণ করেন।
এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী সুরজা রানী দাস বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। (নং-১১, তারিখ- ১৯/০৩/৪)।
আসামীরা হলেন আয়নারগোপ গ্রামের মৃত হাসেন আলীর ছেলে মো. রুবেল মিয়া (২৫), আফসার উদ্দিনের স্ত্রী কল্পনা আক্তার (২৪), পছন্দ আলীর ছেলে আফসার উদ্দিন (৩০) এবং মৃত হাসেন আলীর স্ত্রী মালেকা আক্তার (৫২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত মধু চন্দ্র দাসের বড় ছেলে সবুজ চন্দ্র দাস (২৫) এর সাথে পাশের বাড়ীর আক্তার হোসেনের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী কল্পনা আক্তারের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ১৫ মার্চ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সবুজ চন্দ্র দাসকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করে বিষয়টি মীমাংসা করে। পরবর্তীতে মীমাংসিত বিষয় না মেনে রুবেল গং হাতে লাঠি ও বল্লমসহ ১৬ মার্চ বিকেল ৩ টার দিকে মধু চন্দ্র দাসের বাড়িতে এসে বলে মীমাংসার বিষয়টি আমরা মানি না। এক পর্যায়ে রুবেল গং মুধ চন্দ্রকে অতর্কিত গালিগালাজ করে এলোপাথারিভাবে মারধর শুরু করে। এসময় রুবেল মিয়া সাথে কল্পনা আক্তার, আছসার উদ্দিন ও মালেকা আক্তারও এলোপাথারি মারধর করেন মধুকে। এতে মধু চন্দ্র গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে যায়। আহত মধুকে বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া গেলে কর্তব্য ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে রেফাড করেন। পরে উপজেলার ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে মধু চন্দ্র দাসের মৃত্যু হয়।
ঘটনার সময় রুবেল গং মধু চন্দ্র দাসের ঘর থেকে লক্ষাধিকার টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে বাজিতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশের সুরতহাল তৈরি করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে লাঠি ও বল্লম উদ্ধার করেন।
বাজিতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুর্শেদ জামান জানান, কল্পনা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে তার আত্মীয়-স্বজন শারীরিক প্রতিবন্ধী মধু চন্দ্র দাসকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ঘটনা তিন দিনের মাথায় ১ নং আসামি রুবেলকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।