নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার মৌটুপি গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে কাইয়ূম মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। নিহত কাইয়ূম মৌটুপি গ্রামের রমিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে ।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত অন্যদেরকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৌটুপি গ্রামে সরকারবাড়ির বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সাফায়েত উল্লাহ এবং কর্তাবাড়ির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হক গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয় নিয়ে ডর্জনখানেক খুনের ঘটনা ঘটে। গত ঈদের পরদিন তোফাজ্জল হকের গোষ্ঠীর নাদিম প্রতিপক্ষের লোকজনের হাতে খুন হন। এর কয়েকদিন পর কর্তাবাড়ির লোকজনের হাতে খুন হন সরকার বাড়ির ইকবাল। দুটি খুনের ঘটনায় দুপক্ষের শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। উভয়পক্ষের দুইশতাধিক লোককে আসামি করে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। এরইমধ্যে কর্তাবাড়ির নাদিম হত্যা মামলার আসামিরা আদালত থোকে জামিন পেয়ে বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু সরকারবাড়ির ইকবাল হত্যা মামলার আসামিরা জামিন না নিয়ে বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে আসলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই কাইয়ূম নিহত হন। এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়।
এ বিষয়ে সরকারবাড়ির বর্তমান চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ বলেন, কর্তাবাড়ির নাদিম মারা গেলে আমাদের গোষ্ঠীর কমপক্ষে দুইশ বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ৫২ বছর যাবত তোফাজ্জল হক তার বংশের লোকজন নিয়ে আমাদেরকে অত্যাচার নির্যাতন করছে। আমার দুই ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আজও আমার বংশের কাইয়ূমকে তারা হত্যা করল।
অপরদিকে কর্তাবাড়ির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক বলেন, আমার বংশের লোকজন পলাতক জীবন থেকে বাড়িতে গেলে সরকারবাড়ির লোকজন তাদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। তিনি আরো বলেন, আমরা অত্যাচার নির্যাতন করিনা, বরং সরকারবাড়ির লোকজনের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। তারা এ পর্যন্ত আমার বংশের ৪ জনকে খুন করেছে।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মৌটুপি গ্রামের দুটি বংশের ঝগড়া বিবাদ দীর্ঘদিনের চলমান।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।