কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে এক নারী শিক্ষিকাকে তারই মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব ও শ্লীলতাহানির লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগসহ মিঠামইন থানাও অভিযোগ করেছেন।
সরজমিন অনুসন্ধানে, মিঠামইন উপজেলার শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওঃ মোঃ আমিনুল হক একই মাদ্রাসার শিক্ষিকা ইবি কারী জিনাত সুলতানাকে কুপ্রস্তাব ও শ্লীলতাহানি অভিযোগে সরজমিন পরিদর্শনে গেলে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের তথ্য প্রমান উঠে আসে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে । প্রতিষ্ঠানটিকে সুপার পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যোগসাজশে লুটপাট করেছে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বোন মিঠামইন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আছিয়া আলমকে সভাপতি বানিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে মাদ্রাসাটির শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছেন। অপরদিকে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাত ও অপচয় করেছেন বছরের পর বছর শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করিয়ে।
অভিযুক্ত মো. আমিনুল হক মিঠামইন উপজেলার গোপদীঘি ইউপির শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা সুপার পদে কর্মরত এবং ভুক্তভোগী জিনাত সুলতানা
একই মাদ্রাসার ইবি কারী শিক্ষিকা।
জিনাত সুলতানার অভিযোগ, মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকেই সুপার আমিনুল হকের লালসার শিকার তিনি । বিভিন্ন সময় আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন সুপার। কিন্তু আমি তার সব প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করায় সুপার আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলেন। এমনকি আমাকে কুপ্রস্তাবে রাজি করতে না পারায় আমার স্বামীকে তালাক দিয়ে সুপারকে বিয়ে করতেও নানামুখী চাপ আর হয়রানি করেছেন।
আমাকে কোন ভাবেই তার উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে না পেরে আমার স্বামীকে জামাত শিবিরের ট্যাগ লাগিয়ে হয়রানিরও অনবরত হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন।
সর্বশেষ গত জুলাই মাসের ৭ তারিখে একা পেয়ে অফিস কক্ষে নাকি জিনাত সুলতানাকে শ্লীলতাহানি করে। এ সময় তার চিৎকারে অন্যান্য সহকর্মীরা তরিৎ চলে আসলে তিনি দ্রুত সড়ে পড়েন। এসব বিষয়ে কারো কাছে মূখ খুললেই চাকুরী চলে যাবে বলে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন অভিযুক্ত সুপার।
সর্বশেষ নিরুপায় হয়ে নিজের মান সম্মানের নিরাপত্তার জন্য নারীলিপ্সু সুপার আমিনুল হকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করেছেন।
জিনাত সুলতানা আরও বলেন, এ সমস্ত ঘটনা তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আছিয়া আলমের কাছে অভিযোগ শেষে সুপারের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে গিয়ে তিনি আমার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানিসহ হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনারও আমি সঠিক বিচার চাই।
শুধু নারী শিক্ষিকারাই নয়, ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয়দের মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে সুপারের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের ব্যাপারে মাদ্রাসার শিক্ষিকা ইবি কারী জিনাত সুলতানা গণমাধ্যমকে জানান, এলাকাবাসীর চাপে এখন আমরা আপোষ করার সিদ্ধান্ত নিয়ছি। তাই সংবাদ প্রকাশ আপাতত দরকার নেই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সুপার আমিনুল হক বলেন, এগুলো সবই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা অপবাদ। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই করা হয়েছে। এখন তাঁরাই আমার সাথে আপোষ করার চেষ্টা করছে গ্রামবাসী নয়।
অভিযোগের ব্যাপারে মিঠামইন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সফিউল আলম বলেন, অভিযোগ পেয়ে তদন্তের জন্য জন্য দেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ খুব দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মোঃ আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, অভিযোগের যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।