মোহাম্মদ খলিলুর রহমান:
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে নিরাপদ স্বাস্থ্য প্রকল্পের নামে ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সেইফ হেলথের মহাপরিচালক হোমিও চিকিৎসক মুহাম্মদ মনিরুল আলম।
হাসিনা অল্টারনেটিভ মেডিকেল এইচ.এম.এ ট্রেনিং ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে সহজে চাকরি দেওয়ার নাম করে বাজিতপুর, নিকলী, কটিয়াদী ও অষ্টগ্রামের ১৩৫ জন তরুণ-তরুণী কাছ থেকে প্রায় সাত লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ।
গতকাল ২২ এপ্রিল (সোমবার) বিকেলে শিক্ষার্থী ও জনতা মুহাম্মাদ মনিরুল আলমকে ধরে বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: শামীম হুসাইনের কাছে নিয়ে আসে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: শামীম হুসাইন, অভিযুক্ত মনিরুল আলমের সাথে কথা বলেন ও তার কাগজপত্র দেখে ভুয়া প্রতারক মনে হওয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ধারা-৪৪ (মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার অপরাধে) মনিরুল আলমকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হোমিও চিকিৎসক মুহাম্মাদ মনিরুল আলম ২০১৪ সাল থেকে অল্টারনেটিভ স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্পের নামে বিভিন্ন জেলায় তরুণ-তরুণীদের পল্লী চিকিৎসক প্রশিক্ষণের নাম দিয়ে টাকা নিচ্ছে ।
গত বছরে ১ লা জুন বাজিতপুরে সেইফ হেলথের অফিস উদ্বোধন করে। বড় অংকের বেতনে নিশ্চিত চাকরি দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন মেয়াধে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করে । এই সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১১ হাজার করে টাকা নেন।
বিনিময়ে ব্যাগ, খাতা , কলম, কার্ড ফাইল, এ্যাপরন, বই, বিপি মিশিন, ডায়াবেটিস পরীক্ষার মেশিন, তার্মোমিটারসহ বিভিন্ন মালামাল দেন বলে জানাযায়।
সেইফ হেলথে প্রশিক্ষণ নিতে আসা শিক্ষার্থী শাবনাজ আক্তার রিতু জানান, আমি একজন রেজিস্টার্ড নার্স। তাদের বিজ্ঞাপন দেখে বড় অংকের বেতনে চাকরি পাওয়ার আশায় সাড়ে ১০ হাজার টাকা প্রশিক্ষনের জন্য দেই। টাকা দেওয়ার পর থেকে তাদের কার্যকলাপে সন্দেহ হতে থাকে ।
সেইফ হেলথ প্রকল্পের কথিত মহাপরিচালক ডাঃ মুহাম্মদ মনিরুল আলম নিজেকে অনেক বড় ডাক্তার বলেও তিনি মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নামই জানেনা । যে সহজ শর্তে চাকরির কথা বলে ছিল দিন দিন এই শর্ত আরো কঠিন করে ফেলেন তিনি ।
ভুয়া ও প্রতারণায় অভিযুক্ত ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত সেইফ হেলথের মহাপরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল আলম বলেন, সুরক্ষিত স্বাস্থ্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন মেয়াদী পল্লী চিকিৎসক প্রশিক্ষণ দেই । প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে চিকিৎসার সরন্জামাদি ও বই দেি। সে জন্য তাদের কাছ থেকে টাকা নেই।
বাজিতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান বিপিএম সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার অপরাধে বাজিতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: শামীম হুসাইন, মনিরুল আলমকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে বাজিতপুর থানায় পাঠায় । রাতেই তাকে কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।