কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
ইটনা থেকে নিখোঁজের তিনদিন পর মিঠামইনের ঝিনুক নদী থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফায়েম মিয়া ওরফে বকুল (১৪)’র মরদেহ উদ্ধার করেছে মিঠামইন থানা পুলিশ।
গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১:২০ ঘটিকায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে মিঠামইন থানা পুলিশ সংবাদ পায় যে, মিঠামইন থানাধীন সিংগা গ্রামের ঝিনুক নদীতে একটি লাশ দেখা গিয়াছে। সংবাদ প্রাপ্তির পর মিঠামইন থানা পুলিশ ঝিনুক নদীতে গিয়ে হাত-পা বাধা অবস্থায় ভিকটিম এর লাশ উদ্ধার করে এবং ইটনার থানায় বিষয়টি অবহিত করে (ইটনা থানা হতে পূর্বে বার্তার মাধ্যমে জিডি’র বিষয়টি অবহিত করা ছিল)।
এরপূর্বে নিখোজ বকুলের পিতা জয়নাল আবেদীন (৪৭), পিতা-মঞ্জুর আলী, মাতা-মেহের বানু, সাং-গজারিয়াকান্দা উত্তরপাড়া, থানা-ইটনা, জেলা- কিশোরগঞ্জ এর ছোট ছেলে ভিকটিম ফায়েম মিয়া ওরফে বকুল (১৪) গত ২১ এপ্রিল বিকাল অনুমান ৩:০০ ঘটিকার সময় অভিযোগকারীর মেজো ছেলে পায়েল এর লাল রং এর এপাসি আরটিআর ১৬০ সিসি মোটরসাইকেল যোগে আমিরগঞ্জ বাজার হতে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়িতে না আসায় নিখোজ বকুলের পিতা ইটনা থানায় সাধারণ ডায়রী নং জিডি নং-৮৬৪, তারিখ- ২৩/০৪/২০২৪ দায়ের করেন।
ইটনা থানা পুলিশ উক্ত জিডির পেক্ষিতে জয়নাল আবেদীনকে লাশ প্রাপ্তি বিষয়টি অবহিত করলে জয়নাল আবেদীন এর মেজো ছেলে পায়েল আত্মীয় স্বজনসহ লাশ প্রাপ্তির স্থানে উপস্থিত হয়ে লাশের পরিচয় সনাক্ত করে। পরবর্তীতে নিহত বকুলের বাবার নিকট বিস্তারিত ঘটনা শুনে মিঠামইন থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করে ঘটনায় জড়িত সন্দিগ্ধ হিসেবে আসামি মোঃ সাব্বির মিয়া (১৯), পিতা- ফিরোজ মিয়া , সাং-গজারিয়াকান্দা উত্তরপাড়া, থানা-ইটনা, জেলা- কিশোরগঞ্জকে ইটনা থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করে।
এরপর ২৫ এপ্রিল বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেন। আসামি মো: সাব্বির বিজ্ঞ আদালতে ফৌ. কা. বি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মাধ্যমে ভিকটিমকে হত্যা করে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় যে, নিহত বকুল হবিগঞ্জের আজমীরিগঞ্জ থানাধীন ছুলুরি মডেল স্কুল এর ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিল। ভিকটিম ফায়েম মিয়া ওরফে বকুলের সাথে উল্লিখিত গ্রেফতার কৃত আসামী ও পলাতক আসামী তৌফিকুল ওরফে তুহুকুল (২২), পিতা- মৃত সফর আলী, উভয় সাং- গজারিয়াকান্দা উত্তরপাড়া, থানা-ইটনা, জেলা-কিশোরগঞ্জসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনের সহিত বন্ধুর মতো প্রায় সময়ই চলাফেরা করতো।
গত ২১ এপ্রিল তারিখে বিকাল অনুমান ৩:০০ ঘটিকার সময় অভিযোগকারীর মেজো ছেলে পায়েল এর লাল রং এর এপাসি আরটিআর ১৬০ সিসি মোটর সাইকেলযোগে ভিকটিম, গ্রেফতারকৃত সাব্বির মিয়া ও পলাতক আসামি তৌফিকুল ওরফে তুহুকুল ইটনার আমিরগঞ্জ বাজার হতে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে কোন কলহ বা অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে সু-পরিকল্পিভাবে ধৃত আসামি সহযোগী আসামিরদের সহায়তায় ভিকটিমকে হত্যা করে মোটরসাইকেলটি নিয়া যায় মর্মে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন।
নিহত ফায়েম মিয়া ওরফে বকুল এর পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মিঠামইন থানার মামলা নং ০৭, তারিখ ২৫/০৪/ ২০২৪ খ্রি:, ধারা-৩০২/ ২০১/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
মামলাটি মিঠামইন থানার এসআই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন তদন্ত করছেন। তদন্তকারি কর্মকর্তা নিহত বকুলের সাথে থাকা মোটর সাইকেলটি গ্রেফতারকৃত আসামি মো. সাব্বির মিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ থানা এলাকা হতে উদ্ধার করেছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে অষ্টগ্রাম সার্কেল এ এস পি স্যামুয়েল সাংমা বলেন, ঘটনাটি সত্যিই দুঃখ জনক। তবে আমরা তথা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি তাৎক্ষণিক আমলে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার ও চোরাইকৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত খুব দ্রুত অন্য আসামীদের আইনের আওতায় আনতে পারব। তাছাড়া তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ স্যার সার্বক্ষণিক আমাদের দিকনির্দেশনাও দিচ্ছেন।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২১. © হাওর টাইমস ২৪, এই ওয়েবসাইটের কোনো, লেখা, ইমেইজ, ভিডিও চিত্র, অডিও, অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যোগ্য।